শয়তানের ফাঁদ
শয়তানের ফাঁদ খুবই সূক্ষ্ম। যখন সে দেখে যে কেউ তার জাহেলি জীবন থেকে বেরিয়ে
পূর্ণাঙ্গরূপে ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করেছে ও ইসলামের সুশীতল ছাঁয়াতলে এসে প্রশান্তির
জীবনযাপন করছে ও ভালো আছে, তখন সেটা তার সহ্য হয় না। তখন সে আরো অভিনব কৌশলে চেষ্টা
করে বান্দাকে পথভ্রষ্ঠ করার।
সে চেষ্টা করে বান্দার মাঝে কৌশলে নানা সংশয় ঢুকাতে। যখন ব্যার্থ হয় তখন চেষ্টা
করে নানা ভাবে বান্দাকে তার উপর মুসলিম ভাইয়ের বিরুদ্ধে রাগিয়ে দিতে ও দুই ভাইয়ে ঝঁগড়া
লাগাতে। যখন এতেও ব্যার্থ হয়, তখন চেষ্টা করে বান্দাকে অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজে ব্যাস্ত
করে দিতে। তাকে দিয়ে অপর মুসলিম ভাইয়ের গীবত করাতে। যখন এতেও ব্যার্থ হয়, তখন সে তার
সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রটা ব্যাবহার করে। সেটা হলো ‘ভবিষ্যত নিয়ে দুঃশ্চিন্তা’। একজন
মুসলিম খুবই প্রশান্তিময় জীবন যাপন করে, তার জীবনের প্রধাণ কাজই হলো আল্লাহর ইবাদাত
করা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর দেয়া হুকুম-আহকাম মেনে চলা। এরপর সে তার অন্যান্য
কাজ করবে। এই ক্ষেত্রে সে ঠান্ডা মাথায় স্থীর ভাবে নিজের প্রতিটি কাজের জন্য লক্ষ্য
নির্ধারণ করবে আর সেই কাজে এগিয়ে যাবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে নানা ধরণের বাঁধা তৈরি করে
শয়তান। তার কর্ম সম্পাদনের পথে সে নানা ধরণের ইস্যু তৈরি করে যেগুলোকে সে অনেক বড় করে
দেখায়। আসলে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে দেখা যাবে যে এসব কিছুই না।
সেসব ইস্যু দিয়ে শয়তান বান্দাকে হুট করে পেরেশানিতে ফেলে দেয়। কারণ তার কাজই
এটা। একদম কোনো ভাবেই কাউকে পথভ্রষ্ঠ করতে না পারলে শেষে শয়তান এই কাজই করে। ফলে বান্দা
হুট করে পেরেশানিতে পরে যায়, নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এতে একদিকে
যেমন বান্দা পেরেশানিতে মানসিক পীঁড়ায় ভোগে, অন্যদিকে সে তাঁর মূল্যবান সময় নষ্ট করে।
এখানেই শয়তানের সফলতা।
বান্দা চিন্তায় ডুবে থেকে সময় নষ্ট করতে থাকে। দুঃশ্চিন্তায় পীঁড়িত হয়ে দৈনন্দিন
ইবাদাতে মনোযোগ হারাতে থাকে। ফলে আল্লাহর রহমতও বান্দার উপর থেকে কমে যায়। আর রহমত
কমা মানে শয়তানের প্রভাব তার উপর বিস্তৃত হওয়া। এভাবেই আস্তে আস্তে শয়তান বান্দাকে
গুনাহের দিকে ধাবিত করে। তাই ভবিষ্যত নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করাই যাবে না।
রিলাক্স ভাবে মুক্ত ভাবে থাকুন, আল্লাহর ইবাদাত করুন। আর স্বাভাবিক ভাবে নিজের
দৈনন্দিন কাজগুলো করে যান। আর সফলতার জন্য আল্লাহর মুখাপেক্ষি হোন। দেখবেন, আল্লাহই
ব্যাবস্থা করে দিবেন সব।