মুসলিম তরুণদের মাঝে পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা বিষয়ে সচেতনতা
আমাদের এক জেনারেশন বা আমাদের পাঁচ ছয় বছরের
সিনিয়রদের মাঝে ও আমাদের বর্তমান সময়ের মুসলিম তরুণদের মাঝে চিন্তাগত দিক থেকে একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। সেটা হলো, তারা (পূর্ববর্তীরা) যা দেখতো তাতেই বিশ্বাস করতো। অর্থাৎ, বিশ্বমিডিয়া ও বিভিন্ন অঞ্চলিক মিডিয়াগুলো তাদের যা
গেলাতো, তারা সেটাকেই চোখ
বন্ধ করে গো-গ্রাসে গিলতো। সেটাকেই সত্য বলে ধরে নিতো। কারণ বিষয়গুলো তাদের সামনে
সেভাবেই প্রেজেন্ট করা হতো।
তবে
আমার সময়সাময়িক যে জেনারেশনটাকে আমি বর্তমানে দেখছি, তারা তাদের পূর্ববর্তী যেকোনো জেনারেশন থেকে অধিকপরিমাণে
এনালিটিক্যাল। তাদেরকে আর
পূর্ববর্তী জেনারেশনগুলোর মতো বুদ্ধিবৃত্তিক দাস বানিয়ে রাখার সুযোগ নেই। তারা এখন মিডিয়া প্রোপাগান্ডা বিষয়ে অধিক ধারণা রাখে। যেকোনো নিউজ শুনেই তারা
বিশ্বাস করে না, বরং ফ্যাক্টচেক এর
মধ্য দিয়ে বিষয়টাকে যাচাই করে।
কারণ
তারা জানে, পৃথিবী কিভাবে
নিয়ন্ত্রিত হয়, কারা নিয়ন্ত্রণ করে, কিভাবে করে, সেক্ষেত্রে মিডিয়ার ভূমিকা কি - এসব কন্ট্রোলিং ম্যাকানিজম সম্পর্কে তারা
ওয়াকিফহাল। তারা Imperialism, Neo-imperialism, Orientalism - সম্পর্কে ওয়াকিফহাল। তারা জানে, কিভাবে মানুষের
চিন্তাকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
তারা জানে, কিভাবে বছরের পর বছর ধরে, শিক্ষা ব্যাবস্থা, মিডিয়া, নাটক-চলচ্চিত্র, ওয়েব
সিরিজ, শিল্প-সাহিত্য – এসবের মাধ্যমে তাদের ব্রেইনওয়াশ করে সাম্রাজ্যবাদীদের বুদ্ধিবৃত্তিক
দাসে পরিণত করা হয়েছে। তাই তাদেরকে বোকা বানানো এতো সহজ না, বরং তারা খুব সহজেই পশ্চিমা ও ভাঁড়তীয় (ভারতীয়) মিডিয়ার ভন্ডামি ধরে ফেলে। এর
ফলাফল আমরা স্যোশাল মিডিয়াতেও দেখি। নানা ধরণের পশ্চিমা ও ভাঁড়তীয় (ভারতীয়)
প্রোপাগান্ডা নিয়ে এরা হাসাহাসি করছে, ট্রল করছে।
পশ্চিমা ও ভাঁড়তীয় বুদ্ধিবৃত্তিক
ন্যারেটিভের যায়গায় তারা নতুন স্বাধীন বুদ্ধিবৃত্তিক ন্যারেটিভ গড়ে তুলছে। বছরের পর
বছর ধরে গড়ে তোলা পশ্চিমা ও ভাঁড়তীয় কালচারাল হেজেমনিকে চ্যালেঞ্জ করছে। এটা এক প্রকার
পশ্চিমা ও ভাঁড়তীয় বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।
আল্লাহ তা’আলা এভাবেই
সত্যকে মিথ্যা থেকে আলাদা করে দেন এবং তাকে সব সময় মিথ্যার উপর বিজয়ী করেন। কখনো বা
মিথ্যা সাময়িকভাবে বিজয়ী হলেও, তার পতন দ্রুতই হয়। সত্য সর্বদা বিজয়ী থাকে।
কোরআনের ভাষায়,
"সত্য এসেছে, মিথ্যা বিতারিত হয়েছে,
নিশ্চয়ই মিথ্যে, চিরদিনই মিথ্যে।"
(সূরা বনী ইসরাইল: ৮১)