দুইটি গল্প ও একটি শিক্ষণীয় ম্যাসেজ
গল্প-১
একদেশে
এক চোর ছিলো আর ছিলো এক নামাজী ব্যাক্তি। প্রতিরাতে চুরি করাটা ছিলো তার নিত্যদিনের
অভ্যেস। তেমনিভাবে নামাজী ব্যাক্তির অভ্যেস ছিলো প্রতিরাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়া ও ফজরের
সময় নামাজ পড়া।
একদিন
নামাজী ব্যাক্তিটি ফজরের সময় মসজিদের সামনের পুকুরে গেলো অজু করতে। ঠিক একই সময় সেই
চোরটিও মসজিদের সামনের পুকুরে গেলো চুরির পর হাত মুখ ধুতে। দু’জন দুই পাঁড় দিয়ে নিজেদের
কাজ করছিলো। এমন সময় নামাজি ব্যাক্তিটির চোখ পড়লো দূরে বসে থাকা চোরের দিকে। তিনি মনে
মনে বলে উঠলেন, ‘আহারে, আল্লাহর কোন পরহেজগার বান্দা জানি তাহাজ্জুদের নামাজ শেষ করে
পুকুরে এসে অজু করছে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য!’
অন্যদিকে
চোরটিরও চোখ পড়লো নামাজি ব্যাক্তিটির দিকে। সে মনে মনে ভাবলো, ‘ওরে সালা, এতো রাতে
পুকুরের ঐ পাড়ে আমার মতোই হয়তো কোনো ঝাঁনু চোর চুরি করে এসে হাত-মুখ ধুচ্ছে।’
গল্প-২
আমি ও আমার বন্ধু আসরের নামাজ পড়তে মসজিদে ঢুকলাম।
নামাজ শুরু হতে এখনো অনেক দেরি। আজানই দেয়া হয় নি এখনো। মসজিদের নির্মল পরিবেশে বসে
আমি তসবিহ বের করে জিকির করছিলাম মনে মনে। আমার বন্ধু পকেট থেকে ফোন বের করে কোরআন
দেখছিলো। সুরা আর রহমান পড়ছিলো আমার বন্ধুটি। যেনো মোবাইলের স্কিনে বুদ হয়ে গেছে বন্ধু
আমার। এমন সময় এক মুরব্বী মসজিদে ঢুকলেন। আমার বন্ধুর হাতে মোবাইল থেকে তিনি তার সাথে
থাকা আরেক মুব্বীকে বলে উঠলেন, ‘কি যুগ আইলো দেখলা মিয়া। পোলাপান মসজিদে বইসাও প্রেম
করে।’
অথচ
আমার বন্ধুটি মোটেও প্রেম করছিলো না বরং তার রবের কালাম পড়ছিলো।
শিক্ষাঃ
আমরা
এমন একটি সমাজ ব্যাবস্থায় বাস করি যেই সমাজটা ন্যাগেটিভিটিতে পূর্ণ। আমাদের সমাজের
অধিকাংশ মানুষই মূলত খারাপ। এই খারাপ মানুষদের মধ্যে থাকতে থাকতে ও তাদের খারাপ কর্মকান্ড
দেখতে দেখতে আমাদের হৃদয় পঁচে গেছে। এতোটাই পঁচে গেছে যে আমরা যদিও বা এসব খারাপ কাজ
করি না, তবে আমাদের হৃদয়ে সব সময় এসব চিন্তাই থাকে। তাই তো আমরা ভালো মানুষকে দেখলেও
তাদের বিষয়ে পুরোপুরি শিওর না হয়ে বাজে ধারণা করি। অথচ আমরা জানি না, এসব বাজে ধরণা
করে আমরা দিন দিন নিজেদের গুণাহের বোঝাই ভারী করে যাচ্ছি।
আসলে
যে যেমন সে অন্যকেও তেমনি ভাবে। একজন চোর প্রতিটা মানুষকে তার মতো চোর হিসেবেই বিবেচনা
করে। আর একজন পরহেজগার ব্যাক্তি আরেকজন মানুষকেও তার নিজের মতো পরহেজগারই ভাবে। পার্থক্যটা
আসলে চিন্তা ও হৃদয়েরর পরিশুদ্ধতায়।